অন্যরাও গানের সাথে তাল মিলালো। তাদের সবার মাঝে অপেক্ষাকৃত বেশি খাটো বিদঘুটে চেহারার ছেলে টা গানের মাঝে বললঃ "যদি কথা না শোনে তুইল্লা লইয়া যামু"
জল বুঝতেই পেরেছে কথাগুলো ওকে উদ্দেশ্য করে বলা হচ্ছে তাই রাগে সারা গা জ্বালা করছিল ওর কিন্তু আজকে আর ঝগড়া করার মন মানসিকতা নেই, এমনিতেই ঘরে সমস্যা চলতাছে তাই দ্রুত হেঁটে অন্তুদের বাসার গেটে ঢুকে গেলো।
রুমের সামনে এসে আবারো দুগাল, দুচোখ ভালো করে মুছে দরজায় কড়া নাড়ল। ভেতর থেকে কোন শব্দ আসছে না......অন্তু কি ঘুমিয়ে আছে নাকি বুঝতে একটু জোড়ে আবারও নক করতেই অন্তু এসে দরজা খুলল। কেন জানি জলের মনে এখন অন্য রকম একটা সন্দেহ ঢুকলো। সে মনে মনে বললঃ নিশ্চয়ই ঘরে কেউ আছে! তা না হলে দরজা খুলতে এতো দেরি হলো কেন ওর!
জল অন্তুর সাথে কোন কথা না বলে সোজা ভিতরের রুমে চলে গেলো। ভালো করে খাটের নিচে, বারান্দায়, পাকের ঘর এমনকি বাথরুম টা ও খুঁজে দেখলো! অন্তু রাজ্যের বিরক্তি নিয়ে বললঃ এই কি খুঁজো তুমি!
জল এমনিতেই রেগে ছিল, আরো রেগে বললঃ আমার ইচ্ছা, আমি যা খুশি খুঁজবো! আপনার কি!
জলের মুখে "আপনি"কথাটা শুনেই অন্তু বুঝতে পেরেছে জল এখনো রেগে আছে আর হয়তোবা ঘরে কিছু একটা হয়েছে তাই নরম স্বরে বললঃ কি হয়েছে তোমার? ঘরে কিছু হয়েছে?
অন্তুর মায়াভরা কন্ঠ শুনে জলের কাঁন্না যেনো আরো বেড়ে গেলো! সে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো! অন্তু বোকা হয়ে গেলো! বুঝতে পারল না কি করবে। জল বোরকা, জামা খুলে ফেললো! অন্তু অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। জল জামা খুলে পিঠ টা দেখালো।
জলের পিঠের দিকে তাকিয়ে অন্তুর গা শিউরে ওঠলো! জলের পিঠে, হাতের বাহুতে চার আংগুল পরিমান মোটা লাল দাগ ফুলে ফুটে আছে! ফর্সা শরিলে বেমানান দাগগুলো যেনো উপহাস করছিল!
অন্তু জলকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললঃ জান! কে করছে তোমার এই অবস্থা?
জল কাঁদতে কাঁদতে অন্তুর কাছে সব খুলে বলল। রাস্তায় আসার সময় যে বখাটেরা বিরক্ত করে তাও বললো। অন্তুর অনেক রাগ হচ্ছিল তাই সে জলের হাত ধরে ওকে বাসার নিচে নিয়ে এলো। ছেলেগুলো তখনও সেখানেই বসে ছিলো, জলের হাত ধরে অন্তুকে আসতে দেখে সবাই তাকিয়ে রইল।
অন্তু জলকে নিয়ে ছেলেগুলোর সামনে গিয়ে নরম স্বরে বললঃ এটা কি ভাই? তোমরা আমরা একই এলাকায় থাকি, এক এলাকায় থাকার পর যদি তোমাদের জন্যে আমার ভালোবাসার মানুষ টার ক্ষতি হয়, এটা কি হলো? ওকে বিরক্ত করো কেন তোমরা?
অন্তুর স্বাভাবিকভাবে বলা কথাগুলো ছেলেদের কাছে তেমন খারাপ মনে হয় নি, খাটো ছেলেটা কেশে বললঃ
ভুল বুঝছেন আপনারা, আমরা সৌখিন মানুষ, গান গাই তারমানে এই না যে আমরা উনাকে দেখে এসব করি!
অন্য আরেকজন বললঃ আপনাকে আমরা ভালো করেই চিনি, আপনাদের দুজন কে হাতে ধরে আসতে দেখেই আমরা বুঝে গেছি আপনাদের মাঝে সম্পর্ক টা কি, তাই চিন্তামুক্ত থাকেন। আজকের পর আমরা আর ওনাকে কিছু বলবো না।
ছেলেদের কথায় অন্তু উষ্ণ একটা ধন্যবাদ দিয়ে জল কে নিয়ে আবার রুমে চলে এলো।
জল কিছুক্ষন চুপ করে থেকে অন্তুর দিকে তাকিয়ে বললঃ "তুমি আমাকে কতোটুকু ভালোবাসো?
অন্তু জলের কোলে মাথা রেখে শুয়ে ছিল। সে জলের হাতটা ধরে চুমো খেয়ে বললঃ ভালোবাসা যদি মাপা যেতো তাহলে আমার ভালোবাসার ওজন হয়ত বুঝাতে পারতাম!
জল অন্তুর চুলে হাত বুলাতে বুলাতে বললঃ ভনিতা শুনতে চাই না, তুমি শুধু এটা বলো তুমি আমার জন্যে কি করতে পারবা?
অন্তু জলের হাতটা শক্ত করে ধরে বললঃ তুমি যা বলবা আমি তা ই করতে পারবো তোমার জন্যে!
জলের চোখের একফোঁটা পানি অন্তুর কপালে পড়লো।
জল অন্তুর দিকে কিছুক্ষণ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে গলা কাশি দিয়ে বললঃ তাহলে আমাকে নিয়ে পালাতে পারবা?
অন্তু লাফিয়ে উঠল শোয়া থেকে! প্রথমে ঠিক করে শুনতে পায়নি তাই আবার জিজ্ঞেস করলোঃ ক....কি বললে তুমি এখন?!!
জল আগের মতোই পলকহীন চোখে জলের দিকে তাকিয়ে থেকে বললঃ আমাকে নিয়ে পালাতে পারবা?
অন্তু জলের চেহারা দেখেই বুঝতে পেরেছে কথাটা মজার জন্য বলা হয় নি।সে জলকে আরো কাছে টেনে নিয়ে জড়িয়ে ধরে বললঃ
" জানা, এক ঘরে থাকলে এমন একটু আধটু ঝগড়াঝাটি হয় ই, তার মানে তো এটা না যে তুমি বাসা থেকে পালানোর মতো এমন একটা বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে নিবা"!!
জল অন্তুর দিকে তাকিয়ে ভ্রুজোড়া কুচকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললঃ এতো যেহেতু ভয় পাও প্রেম করতে আসছিলা কেন? কেন একবারও বলো নাই যে, বিপদ আসলে তুমি সরে যাইবা? আমি অনেক দিন থেকেই খেয়াল করছি তুমি আমাকে এখন আগের মতো ভালোবাসো না! যতোই আমি তোমার কাছে যেতে চাই, তোমাকে পাশে পেতে চাই, তুমি ততোই আমার থেকে দূরে যেতে চাও!! সমস্যাটা কি তোমার?
অন্তু জলের গালে হাত রেখে বললঃ এসব কি উল্টাপাল্টা কথা বলতাছ তুমি! আমি তোমার প্রতি আগে যেমন ছিলাম, এখনো ও তেমন ই আছি! বিশ্বাস করো তুমি!
জল অন্তুর হাত টা সরিয়ে দলো গাল থেকে। সে আরো রেগে উঠল আর চোখ দিয়ে পানি ঝড়তে লাগলো...... সে চোখ মুছতে মুছতে বললঃ তুমি এক বিন্দু ও আগের মতো নেই, যেই তুমি আমাকে এক সেকেন্ড না দেখলে পাগল হয়ে যেতে সেই তুমি এ কয়েকদিনে আমার সাথে ভালো করে কথাও বলো নি! আমার দোষ টা কি একটু বলবা? দোষ কি এটাই যে আমি তোমাকে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ভালোবাসি নাকি দোষ এটা যে, তোমাকে সব দিয়েছি!
অন্তু কি বলবে ভেবে পাচ্ছিল না। সে বুঝতেই পারেনি জল তার ছোট ছোট অভিমানগুলোকে এভাবে বুকে চেপে রেখেছে, আর ভুল বুঝেছে। অন্তুকে কোন কথা বলার সুযোগ দিলো না জল। সে আবারও চোখ মুছে বিরতিহীন ভাবে বলেই চললঃ " সারাদিনে আমাকে কয়টা call, sms,দাও তুমি! আমি কল না দিলে জিবনে কোন দিন কল দিছ তুমি? কল না দাও, আমার কলটা তো অন্তত ধরবা? আজ পর্যন্ত একদিন ও আমার একবার কল দেওয়াতে তুমি কল ধরো নি! তোমার গায়েই লাগে না যে আমি কত রিক্স নিয়ে তোমাকে হাজারটা কল দেই! কেন দেই জানো! আমার কাছে ভালো বাসার মূল্যটা বেশি, আমার কাছে ভালোবাসা মানে শুধুই তুমি,আমার অন্তর আত্মাটাও তোমার জন্যে প্রতি নিয়ত কাঁদে! তুমি বুঝো আমাকে! পালাতে না পারলে বিছানায় নিছিলা কেন! জবাব দিতে পারবা?
জলের কথাগুলো র কোন টা সত্যি কোন টা মিথ্যা অন্তু তা খুঁজার চেষ্টা করল না, সব কথার বাইরে সে এটাই ভাবতে লাগলো, ওর অজান্তেই জলের প্রতি হয়তোবা ওর অবহেলা সৃষ্টি হয়েছে আর এই কারনেই জল এতো সন্দেহ শুরু করেছে।
অন্তু জলের হাত টা ধরতে গেল কিন্তু জল ধরতে দলো না। জল অন্তুর দিকে তাকিয়ে কান্নাভেজা কন্ঠে বললঃ
তুমি বুঝো না কেন! আমার সহ্য হয় না তোমার পাশে কাউকে! আমি নিশ্বাস নিতে পারিনা যখন তোমার পাশে জান্নাত বা অন্য কোন মেয়েকে দেখি! আমাদের সম্পর্ক টা আমাদের দুজনের কারো পরিবার ই মানবে না! তুমি ভাবো কি করবা, যদি পালাতে না পারো, পালাইওনা.....আমি মরে যাবো তবু অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারবো না, আর একটা কথা ভালো করে মনে রেখো, আমি যদি তোমাকে না পাই অন্য কাউকে পাইতেও দিবোনা আর তুমি ও অন্য কাউকে লাইফে জড়াতে পারবা না!
অন্তু জলের কথায় একটু ও রাগ কএওলো না, বরংচো জলের প্রতি অন্তুর ভালোবাসা আরো বেড়ে গেলো! সে উঠে দাঁড়িয়ে জল কে জড়িয়ে ধরে ঠোঁটে চুমো দিতে দিতে বিছানায় শুইয়ে জলের বুকের উপর মাথা রেখে বললঃ আচ্ছা, জান, Sorry....ভুল করছি, এখন মাফ চাইছি, আচ্ছা পালাবো তবে আর কয়েক মাস পর!
জল অন্তুর চুলে হাত বুলাতে বুলাতে বললঃ ওয়াদা দাও?
অন্তু জলের মাথায় হাত রেখে ওয়াদা করল......যার ফলে দুজনের মাঝে তখন আর কোন পর্দা ছিলো না.......ভালোবাসার সমুদ্রে দুজন যখন সাঁতার কাটছিল মাঝখানে বাঁধা হয়ে আসলো জান্নাতের একটা SmS যা সেকেন্ডের ভিতর জল আর অন্তুর মাঝে আকাশ পাতাল ব্যবধান গড়ে দিল!
অন্তু যখন জলের গালো,ঠোঁটে চুমো খাচ্ছিল তখন অন্তুর প্যান্টের পকেটে মোবাইলটা ছিল যা জলের পেটে চাপ লাগছিল। জল অন্তু কে মোবাইলটা সরাতে বলল। অন্তু এতোটাই উত্তেজিত ছিলো যে জলের কথায় পাত্তাই দিচ্ছিল না।জল নিজেই হাত দিয়ে পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে পাশে রাখতে গিয়ে দেখলো জান্নাতের নাম্বার থেকে ৫ টা SMS স্কিনে ভেসে আছে! সাথে সাথেই জলের মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। সে অন্তুকে প্রথমে কিছু বললো না। আস্তে করে একটা sms open করল।sms এ লিখা ছিল
"কিছু ভালো বাসা না চাইওতেও হয়ে যায়, তোমার প্রতি আমার ভালো বাসা টাও তেমন"
প্রথম এস এম এস পড়ার পরই জলের গা কাঁপছিল। সে এক ধাক্কা দিয়ে অন্তুকে গায়ের উপর থেকি সরিয়ে দিলো! অন্তু অবাক হয়ে গেলো! জল জামা পড়তে পড়তে চিতকার বললঃ এসবের মানে কি!
অন্তু বুঝতে পারছিল না জল কি বলতে চাইছে তাই মোবাইলটা হাত থেকে নিয়ে দেখতে চাইলো কিন্তু মোবাইলে হাত দিতেই জল আরো জোড়ে চিতকার করে বললঃ খবরদার! মোবাইলে হাত দিবিনা! জান্নাত তোকে SmS করার সাহস কই পায়! কুত্তার বাচ্চাটার এতো সাহস তুই ছাড়া ত হয়নি!
জলের ভাষা শুনে অন্তুর ও অনেক রাগ হচ্ছিল। সে বারবার বোঝাতে চাইলো এসবে ওর কোন সম্পৃক্ততা নেই কিন্তু জল কোন কথাই শুনতে নারাজ ছিল! সে পাগলের মতো হয়ে গেলো! টেবিলে রাখা কাঁচের গ্লাসের পানিটা এক ঢোক এ পান করে হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে ঠোঁট মুছে আবার কড়া স্বরে বললঃ " তুই আমাকে এতোই বোকা ভাবিস! আমি কি দেইনি তোকে! কেন তুই আবার অন্য মেয়েকে চাস! জান্নাতের এত্ত সাহস হয় কি করে তোর নাম্বারে এস এম এস করার! তোর আজকে থেকে মোবাইল চালানো বন্ধ!
জল রাগে ফেটে পড়ল! সে অন্তুর মোবাইল থেকে দুইটা সিম খুলে সাথে সাথে ভেংগে ফেলে মোবাইলটা নিজের ব্যাগে রেখে বললঃ তোর মতো জানোয়ারের কাছে কেঁদে আমার কোন লাভ নেই! তাইতো বলি! তুই পালানোর কথায় এতো লাফিয়ে উঠলি কেন! এখন তো আমার প্রতি মন উঠে গেছে! আসতে বলিস তোর জান্নাত কে! ওর চুল একটাও থাকে কি না......
অন্তু জলের হাত ধরার জন্য সামনে যেতেই জল টেবিলের উপর থেকে স্কেল টা নিয়ে বললঃ খবরদার! তোর ওই নোংরা হাত দিয়ে তুই আমাকে স্পর্শ করবি না! আমি তোরে এতো সহজেই সেড়ে দিবো? তুই আমাকে রেখে অন্য মেয়ের দিকে চোখ তুলে তাকাবি!
জল যেন পাগল হয়ে উঠেছিল! সে অন্তুর কোন কথা ই শুনতে চাইলো না। ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে গেলো! জলের সাথে অন্তুর যতো রাগারাগি ই হোক না কেন অন্তু সব সময় জল কে বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসে, আজকে জলের ব্যবহার অন্তুর এতোই খারাপ লাগলো যে ও আর ঘর থেকেই বের হলো না। জল দরজা দিয়ে বের হতে হতে মনে মনে বললঃ দেখবো আজকে আসে কি না পিছনে পিছনে....
জল বাসার নিচে প্রায় ১৫ মিনিট দাঁড়িয়ে রইল, অন্তু নামে নি তাই ওর রাগ টা,এতোটাই বেড়ে গেলো যে, সে আবার অন্তুর রুমে গেলো। অন্তু বাইরের দরজাও লাগায় নি, ওই রুমেই শুয়ে শুয়ে ভাবছিল কি করা যায়, এমন সময় জল ঘরে ঢুকে টেবিল থেকে স্কলে টা নিয়ে অন্তুর পিঠে অনেক জোড়ে আঘাত করে বললঃ অন্য সময় ত তুই আমার একটু লেট হলে পিছনে পিছনে বাসা পর্যন্ত যাস, আজকে জান্নাতকে বকা দেওয়াতে তুই ঘর থেকেও বের হলি না! মানে কি এসবের!
জল রাগে খেয়াই ই করে নি স্কেলের আঘাতে অন্তুর পিঠ কেটে রক্ত বের হচ্ছিল! অন্তু খালি গায়ে ছিল তাই পিঠে হাত দিতেই রক্ত দেখে ও আরো রেগে উঠল! জল এতোক্ষনে খেয়াল করল অন্তুর পিঠ কেটে রক্ত আসছে! সে অন্তুর দিকে তাকিয়ে বললঃ ঘোর, দেখি কতোটুকু কেটেছে!
অন্তু জল কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো।মুখে কোন শব্দ করলো না। জল এতে আরো খেপে গেল। সে অন্তুর দিকে তাকিয়ে বললঃ
"দরজা খোলা রেখেছিস কি জান্নাতের আসার জন্যে"? আচ্ছা, তুই ই বল- সন্দেহ করবো ই বা না কেন! কি করতাছিস তুই এসব! যদি আমার মোবাইলে কোন ছেলে এমন এস এম এস করতো তুই কি করতি আমার সাথে!
জলের কথায় অন্তু মনে মনে বললঃ খুন করে ফেলতাম!
কিন্ত মুখে কোন কথা বলল না। জল কাঁধের টা রেখে অন্তুর পিঠের রক্ত নিজের জামা দিয়ে মুছতে মুছতে বললঃ তুই যদি আমাকে সত্যি ভালোবেসে থাকিস তাহলে এই সপ্তাহের ভিতর আমাকে বিয়ে করবি, আমরা পালিয়ে বিয়ে করবো। আর তোর জান্নাতের যে কি করবো তা কাল সকালেই জানতে পারবি!
অন্তু জলের কোন কথাতে পাত্তা না দিয়ে জল কে বললঃ আমার মোবাইল দেন! আমি আপনার মতো মেয়ের সাথে কোন সম্পর্ক রাখতে চাইনা!
জল অন্তুর রাগ দেখে ঘাবড়ে গিয়েছিল।নিজেকে সামলে নিয়ে বললঃ না না! সম্পর্ক রাখবা কেন! এখন তো তোমার জান্নাত আছে, নন্দিনি আছে! আমি তো পুরান হয়ে গেছি, তাই না!
কথাগুলো বলতে জলের ভিতরটা কাঁন্নায় ফেটে যাচ্ছিল! সে কেঁদে কেঁদে বললঃ এত্ত সহজে তোকে আমি ছেড়ে দিবো? আমার দেহে এক ফোঁটা রক্ত থাকতে আমি তোকে কখনো অন্য কারো হতে দিবো না, কথাটা মনে রাখিস! তুই শুধু আমার!
জল ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে গেলো! অন্তু জায়গায় বসে রাগে বই খাতা ছিঁড়তে লাগলো।
সেদিন দুজনের মাঝে যে ফাটল সৃষ্টি হয়েছিল তার জন্যে কে দায়ী, কে নয় তা জানি না কিন্তু সেদিনের পর থেকে অন্তুর প্রতি জলের ভালোবাসা যেমন বেড়েছিল সেই সাথে ঘৃন্নাও বেড়েছিল শতভাগ আর এর ফলেই কিছু কাজ শয়তানের জন্যে অনেক সহজ হয়ে গিয়েছিল!